একজন টিকটক দেখছেন আর দুইজন পা টিপছেন এরকম একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়েছে। ছবির টিকটক দেখারত ব্যক্তিটি ১৭ বছর আগে ছাত্রত্ব পেরিয়ে যাওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল, আর পা টিপছেন শাখা ছাত্রলীগের উপ-কর্মসূচি বিষয়ক সম্পাদক শামীম আজাদ ও উপ ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক শফিউল ইসলাম।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের ৩১১ নং রুমে বিলাসিতায় জীবনযাপন করে যাচ্ছেন সভাপতি রেজাউল হক রুবেল। তিনজনের আসনটি তিনি একাই দখল করে আছেন।
আবার নিজ কক্ষের দরজায় লেখা আছে রেজাউল হক রুবেল, সভাপতি, চবি ছাত্রলীগ। যেই রুমটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেক আগেই। এছাড়া বর্তমান কমিটির মেয়াদও শেষ হয়েছে অনেক আগে।
বর্তমান নেতাকর্মীদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ তিনি। চবির পরিসংখ্যান বিভাগের ২০০৬-০৭ সেশনের এ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে পার করেছেন ১৭ বসন্ত।
সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক গ্রুপে ছড়িয়ে পড়েছে ছবিটি। এতে কেউ কেউ হা হা প্রতিক্রিয়া ও বিরুপ মন্তব্য করছেন। নিয়াজ আবেদিন পাঠান নামে একজন ফেইসবুকে ছবিটি দিয়ে লিখেছেন- ‘যোগ্যতার চেয়ে বেশি কিছু পেয়ে গেলে হয়তো এমনি হয়। আমরা গর্বিত এমন সভাপতি পেয়ে’।
মুহাম্মদ মজনু নামে একজন মন্তব্য করেছেন, এই ছেলে দুটোর ভাগ্য ভালো যে শুধু পা টিপতে বলেছে, ওর মত পা চাটতে বলেনি!!।
মাইমুন হুসাইন বাপ্পি নামে আরেকজন লিখেছেন, ওনি কিভাবে সারা বছর আদু ভাইয়ের মত সভাপতি থাকতে পারে?
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, এগুলো নতুন নয়৷ ছাত্রলীগ সভাপতি বিভিন্ন সময় তার কর্মকাণ্ডের জন্য সমালোচিত হয়েছেন। তবুও তিনি নিজেকে শুধরাননি কখনো। তাছাড়া কর্মীরা বেশিরভাগ তার ৮/১০ বছরের ছোটো, তাহলে এমন কাজ তো করানোই স্বাভাবিক। নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা না থাকায় এরকম সেশন গ্যাপ তৈরি হয়েছে। কেউই ছাত্র থাকা অবস্থায় নেতৃত্বের সুযোগ পান না। তাই ছাত্রলীগের অনুসারীরা ধরেই নিয়েছেন নেতৃত্বে আসতে হলে ক্যাম্পাসে ৮-১০ বছর থাকতে হবে কমপক্ষে। আমাদের এ জায়গাগুলোতে পরিবর্তন আনা উচিৎ।
এ বিষয়ে চবি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন বলেন,আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি আমাদের পরিবার আমাদের সাথে থাকেনা। আমরা বড়ভাই ছোটভাই সবাই একসাথে থাকি। আমার কোন ছোটভাই অসুস্থ হলে আমি সেবাযত্ন করি,আমি অসুস্থ হলে আমার ছোটভাইরা আমাকে সেবাযত্ন করতে পারে এটাই স্বাভাবিক। আমি যখন জুনিয়র ছিলাম তখনও আমার সিনিয়রকে সেবাযত্ন করেছি এখনও আমার জুনিয়রদের সেবাযত্ন করি। কিছুক্ষণ আগে আমার এক ছোটভাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে দেখে আসছি। এই ঘটনাগুলো খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। এখন এটার একটা ছবি তুলে কেউ আমার বিরুদ্ধে অপরাজনীতি করার চেষ্টা করছে। এটা দুই আড়াই বছর আগের ঘটনা। শরীরটা খারাপ ছিল, আমার পাগুলো ফুলে গেছিল। এটা মানুষ হিসেবে মানুষকে সেবাযত্ন করা। এর চাইতে বেশি কিছু না।